Home » ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব পিসকিপিং ট্রেনিং সেন্টার (আইএপিটিসি) এর ২৬তম বার্ষিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান

ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব পিসকিপিং ট্রেনিং সেন্টার (আইএপিটিসি) এর ২৬তম বার্ষিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান

Author: আইএসপিআর

ঢাকা, ০৩ নভেম্বর ২০২২ঃ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা অপারেশনের প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব পিসকিপিং ট্রেনিং সেন্টার (আইএপিটিসি) এর ২৬তম বার্ষিক সম্মেলন এর সমাপনী অনুষ্ঠান আজ বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর ২০২২) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং (বিপসট), রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি উপস্থিত ছিলেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় “তথ্য প্রযুক্তির যুগে বিশ¡ শান্তিরক্ষায় চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাসমূহ’ এর উল্লেখ করে বলেন, শান্তিরক্ষা অপারেশন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের সাথে সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে ২১ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সচেতন থাকতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই সম্মেলনে গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন উপস্থাপনা অংশগ্রহণকারীদের আরও প্রশিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকল সদস্যের পারস্পরিক মতবিনিময়, জ্ঞানের সমন¡য় সাধন ও সমঝোতা বৃদ্ধিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করবে বলে সেনাবাহিনী প্রধান মত প্রকাশ করেন। পরিশেষে এই অনুষ্ঠান সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য তিনি বিপসট এবং বার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকল সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে জাতিসংঘের সামরিক উপদেষ্টাকে Counter Improvised Explosive Device (CIED) এর প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদি উপহার হিসেবে প্রদান করেন। উল্লেখ্য জাতিসংঘের অনুরোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম তৈরীর প্রকল্প গ্রহণ করে এবং ইতোমধ্যে দুটি মিশনে এই সামগ্রীর ব্যবহার প্রচলন করে। জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামরিক উপদেষ্টা এই প্রকল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং প্রি-ডেপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং এ এই সরঞ্জাম ব্যবহারের জন্য অন্যান্য দেশকে উদ্বুদ্ধ করেন।

এছাড়াও উক্ত সম্মেলনে শান্তিরক্ষা প্রশিক্ষণ বিষয়ক বিভিন্ন উদ্ভাবনী ধারণা, প্রশিক্ষণ সামগ্রী, প্রকাশনা, গবেষণাপত্র ইত্যাদির একটি প্রদর্শনী “আইডিয়া বাজার’ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশ থেকে আগত শান্তিরক্ষা প্রশিক্ষণের সাথে জড়িত বিভিন্ন ইনস্টিটিউট এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করে এবং শান্তি রক্ষায় বিভিন্ন সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী ধারণা তুলে ধরে। উক্ত প্রদর্শনীতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ কর্তৃক ব্যবহৃত আধুনিক অস্ত্র এবং সরঞ্জামাদি প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়। এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের সম্মানে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যাতে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য উপস্থাপন করা হয়। সম্মেলন শেষে এক প্রেস ব্রিফিং এ সেনাবাহিনী প্রধান বিশ¡ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থান, সরকারের সদিচ্ছা, সেনাসদস্যদের পেশাগত দক্ষতা ও লজিষ্টিক্স পারঙ্গমতা ইত্যাদি তুলে ধরেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

সম্মেলনে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, জাতিসংঘের সামরিক উপদেষ্টা, বাংলাদেশে নিযুক্ত ডিফেন্স মিলিটারি অ্যাটাশেগণ, উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থার প্রধান/প্রতিনিধি, বিভিন্ন বিশ¡বিদ্যালয়ের অনুষদবৃন্দ, আইএপিটিসি এর সদস্যভূক্ত ৫২টি দেশসমূহ হতে আগত প্রায় ১৩৫ জন বিদেশী প্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তার সক্ষমতার মানদন্ড বিশে¡র অন্যান্য সেনাবাহিনীর নিকট আরো দৃঢ়ভাবে তুলে ধরলো।

 

সম্পর্কিত পোস্ট