Home » নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ, অপারেশনাল ও লজিস্টিক্স কাজে অনন্য সহায়তা প্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বানৌজা তিতুমীর’কে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করলেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ

নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ, অপারেশনাল ও লজিস্টিক্স কাজে অনন্য সহায়তা প্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বানৌজা তিতুমীর’কে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করলেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ

Author: আইএসপিআর

ঢাকা, ০২ অক্টোবর ২০১৯: প্রশিক্ষণ, অপারেশনাল ও লজিষ্টিক্স কাজে অনন্য সহায়তা প্রদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি বানৌজা তিতুমীর’কে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ (Md.Abdul Hamid)। আজ বুধবার (০২-১০-২০১৯) খুলনায় আনুষ্ঠানিকভাবে বানৌজা তিতুমীর’কে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।

ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি তাঁর বক্তব্যে, মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স¥রণ করেন এবং ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় একটি আধুনিক নৌবাহিনী গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা উলে¬খ করেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু ভারত ও যুগোসøাভিয়া থেকে বেশ কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহ করেন এবং দেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে দ্য টেরিটরিয়াল ওয়াটার্স এন্ড মেরিটাইম জো›স অ্যাক্ট প্রণয়ন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুুর সুযোগ্য উত্তরসূরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার পরিচলনার দায়িত্বভার গ্রহণের পর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। বর্তমান সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে নৌবহরে সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলেন, নৌবাহিনীর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নৌঘাঁটি কমিশন লাভ করেছে। এছাড়া সমুদ্রে নজরদারী ও টহল জোরদার করতে আরও দুটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ক্রয় করা হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে পটুয়াখালীতে এভিয়েশান সুবিধাস¤¦লিত নৌবাহিনীর সর্ববৃহৎ নৌঘাঁটি শের-ই-বাংলা নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। পাশাপাশি যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে প্রজন্মের নৌসদস্যগণ মহান দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ সমুদ্রে নৌবহরের প্রশিক্ষণ ও লজিস্টিক্স সহায়তা প্রদান করছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান নৌঘাঁটি বানৌজা তিতুমীর। দীর্ঘ ৪৪ বছর যাবৎ প্রশাসনিক, লজিস্টিক্স সহযোগিতাসহ নৌসদস্যদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে প্রশিক্ষণ প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই ঘাঁটি। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নবীন নাবিক সৃষ্টির দক্ষ সূতিকাগার হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেছে এই ঘাঁটি। এর অধীনে পরিচালিত নবীন নাবিক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় এবং নেভাল প্রভোস্ট এন্ড রেগুলেটিং স্কুল নাবিকদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। এর পাশাপাশি সরবরাহ শাখার কর্মকর্তা ও নাবিকদের মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রদান করছে স্কুল অব লজিস্টিকস এন্ড ম্যানেজম্যান্ট (সোলাম)।

মহামান্য রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, নৌবাহিনীর নিজস্ব প্রয়োজন ছাড়াও এই ঘাঁটি দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে সরকারের দিকনির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করছে। দেশ গঠনমূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ বানৌজা তিতুমীরকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করার এই মাহেন্দ্রক্ষণ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে। তিনি বানৌজা তিতুমীরের এই অনন্য কৃতিত্বের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, নাবিক ও কর্মচারীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। (মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষন সংযুক্ত…………………………………………………………………………………………………) ।

উলে¬খ্য, ১৮৩২ সালে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সর্বপ্রথম বাঁশের কেল্লার মাধ্যমে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে শহীদ হন সৈয়দ মীর নিসার আলী তিতুমীর। পরবর্তীতে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই ঘাঁটির নামকরণ করা হয় ‘বানৌজা তিতুমীর’। ১৯৭৪ সালের ১০ই ডিসেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিতুমীর এর নামে এই ঘাঁটি কমিশন করেন এবং ‘নেভাল এনসাইন’ প্রদান করেন। যাত্রা শুরুর পর থেকে এই ঘাঁটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ, অপারেশনাল ও লজিষ্টিকস কাজে অনন্য সহায়তা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

এর আগে, সকালে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি খুলনাস্থ বানৌজা তিতুমীর ঘাঁটিতে এসে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী (Aurangzeb Chowdhury) তাঁকে স্বাগত জানান। এছাড়া, অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, নৌ সদর দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, নৌবাহিনীর সকল নৌ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ, মুক্তিযুদ্ধের নৌ কমান্ডোসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, দেশী-বিদেশী কূটনীতিকবৃন্দ ও উর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

 

সম্পর্কিত পোস্ট