Home » বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে র‌্যালী ও সেমিনার অনুষ্ঠিত

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে র‌্যালী ও সেমিনার অনুষ্ঠিত

Author: আইএসপিআর

ঢাকা, ১৪ নভেম্বর ২০১৯ ঃ- ঢাকা সেনানিবাসস্থ আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ (এএফএমসি) এর মেডিসিন বিভাগের তত্ত্বাবধানে ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ আজ বৃহস্পতিবার (১৪-১১-২০১৯) কলেজের নিজস্ব ক্যাম্পাসে পালিত হয়। এ উপলক্ষে সকালে একটি সচেতনতামূলক র‌্যালী কলেজ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে এবং ডায়াবেটিস রোগ ও রোগের চিকিৎসা বিষয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ এর তাৎপর্য এবং এবছরের প্রতিপাদ্য ‘পরিবার ও ডায়াবেটিস’ বিষয়ের উপর মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। উক্ত সেমিনারে এএফএমসি-১৮ ব্যাচের কয়েক জন চৌকষ ক্যাডেট ডায়াবেটিসের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোকপাত করেন। এছাড়া, এএফএমসি এর সিনিয়র ক্যাডেটবৃন্দ এক পোস্টার প্রদর্শনীতে অংশ নেয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ এর কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান এবং প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদপ্তর এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ ফসিউর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কনসালটেন্ট ডেন্টাল সার্জন জেনারেল মেজর জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরী, কনসালটেন্ট সার্জন জেনারেল মেজর জেনারেল মোঃ মাহবুবুর রহমান, এএফআইপি কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল সুসানে গীতি এবং কনসালটেন্ট ফিজিসিয়ান জেনারেল মেজর জেনারেল মোঃ আজিজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এএফএমসি এর ডেপুটি কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সাইদুর রহমান এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের জি এম কাজী নুরুল হক। অনুষ্ঠানে বক্তারা ডায়াবেটিসের বৈশ্বিক সমস্যা এবং এর প্রতিরোধের দিকগুলোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন ও একই সাথে এর পরিনতিও তুলে ধরেন। এক রিপোর্টে দেখা যায় যে, ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন বয়স্ক মানুষ ডায়াবেটিস নিয়েই জীবনযাপন করছেন এবং ধারণা করা হয় এই সংখ্যাটা ২০৪৫ সাল নাগাদ ৬২৯ মিলিয়নে উন্নীত হবে। বাংলাদেশের মত দেশেও ডায়াবেটিস যথা নিয়মে তার মরণ ছোবলের বিস্তার ঘটিয়েছে। ২০১৮ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক রিপোর্টে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ৮০ লাখ। এদেশে প্রতি বছর যতজন মানুষ মারা যায়, তার ৬.৪ শতাংশের কারণ হল এই মরণ ঘাতী ডায়াবেটিস। ২০১৬ সালের আরেক রিপোর্টে দেখা যায় যে, গড়ে সমগ্র দেশের প্রায় ১৯ শতাংশ মানুষের ডায়াবেটিস রয়েছে। বিশ্বব্যাপী টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বেড়ে চলেছে। দেখা গেছে যে, পৃথিবীর মোট ৭৯ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী, মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বসবাস করে এবং এদের বেশির ভাগের বয়স ৪০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলেন, ডায়াবেটিস দীর্ঘ মেয়াদি কিডনী রোগের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কারণ। শুধু তাই নয় এটি একাধারে হৃদরোগ, স্ট্রোক, রক্তনালীর সংকোচন, অন্ধত্ব এবং ইনফেকশনের গুরুত্বপূর্ণ কারণও বটে। ডায়াবেটিসকে প্রায়শই একটি পারিবারিক রোগ হিসেবে ধরা হয়। কারণ, এটি শুধু একজন রোগীকে নয় পুরো পরিবারের পারিবারিক স্থিতিশীলতার উপর আঘাত করে থাকে।
ডায়াবেটিসের তাৎক্ষণিক জটিলতার মাঝে হাইপোগ্লাইসেমিয়া, হাইপারঅসমোলার, হাইপার গ্লাইসেমিক স্টেট, ডায়াবেটিক কিটো এসিডোসিস এবং হঠাৎ মৃত্যুই ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ডায়াবেটিসের দীর্ঘমেয়াদী জটিলতাগুলো বিভিন্ন ভাবে প্রতিরোধ করা যায়। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ, ওজন নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান এবং মদ্যপান থেকে বিরত থাকা, চক্ষু ও পায়ের যতœ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত রক্তপরীক্ষা ইত্যাদি নিয়ম মেনে চললেই ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

সম্পর্কিত পোস্ট