Home » মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বিমান বাহিনীর ১১ স্কোয়াড্রন ও ২১ স্কোয়াড্রন কে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বিমান বাহিনীর ১১ স্কোয়াড্রন ও ২১ স্কোয়াড্রন কে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান

Author: আইএসপিআর

যশোর, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ঃ- বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ১১ স্কোয়াড্রন এবং ২১ স্কোয়াড্রন এর ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠান মঙ্গলবার (২৩-০২-২০২১) যশোরে অবস্থিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমি প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। প্রধান অতিথির পক্ষে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বিবিপি, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি ১১ স্কোয়াড্রন এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুচকাওয়াজ চত্বরে ভিডিও টেলি কনফারেন্স এর মাধ্যমে যুক্ত হলে বিমান বাহিনী প্রধান এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান এর এয়ার অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল মুঃ কামরুল ইসলাম, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি তাঁকে স্বাগত জানান।

‘উদয়ের পথে নির্ভীক’ এই মূলমন্ত্রে দীক্ষিত ১১ স্কোয়াড্রন ভবিষ্যৎ বৈমানিক তৈরীর সুতিকাগার। ১৯৮২ সালে বিমান বাহিনীর বৈমানিকদের মৌলিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ প্রদানের নিমিত্তে ১১ স্কোয়াড্রনের উন্মেষ ঘটে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ক্যাডেটদের মৌলিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশে পাঠানো হতো। পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালের ১২ অক্টোবর ঢাকায় ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ইউনিটের আবির্ভাব ঘটে এবং ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে গণচীন হতে ক্রয়কৃত মৌলিক প্রশিক্ষণ বিমান পিটি-৬ সংযুক্ত হয়। সূচনালগ্ন থেকেই ১১ স্কোয়াড্রন অফিসার ক্যাডেটদের মৌলিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করে আসছে। এর পাশাপাশি অত্র স্কোয়াড্রন বাংলাদেশ সেনা ও নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণার্থী বৈমানিকদের পিটি-৬ বিমানে মৌলিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনা ও নৌবাহিনীর ২৫ জন বৈমানিক অত্র স্কোয়াড্রন হতে মৌলিক উড্ডয়ণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও ১১ স্কোয়াড্রন এ পর্যন্ত বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর ৩৪ জন অফিসার ক্যাডেটকে সাফল্যের সাথে মৌলিক উড্ডয়ণ প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। ভবিষ্যতেও ১১ স্কোয়াড্রন তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম, দেশপ্রেম এবং কর্তব্যপরায়ণতা অক্ষুণœ রেখে দেশমাতৃকার সেবায় নিয়োজিত থাকতে বদ্ধপরিকর। ২১ স্কোয়াড্রন ১৯৮৭ সালে আত্মপ্রকাশের পর থেকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একমাত্র নিবেদিত এ্যাটাক স্কোয়াড্রন হিসেবে অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। “শত্রু দিগন্তে বিভীষিকা” এই মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে এ্যাটাক ফাইভ (অ-৫ওওওঅ) বিমান সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ২১ স্কোয়াড্রন প্রতিষ্ঠিত হয়। অক্টোবর ২০১৫ হতে এই স্কোয়াড্রন রাশিয়ায় তৈরী চতুর্থ প্রজন্মের ফ্লাই-বাই-ওয়্যার সিস্টেম সমৃদ্ধ ইয়াক-১৩০ যুদ্ধ বিমানের উড্ডয়ন কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৯১ সালে নাফ অপারেশন রক্ষা এবং ২০০৮ সালে এ স্কোয়াড্রন আকাশ প্রতিরক্ষার কিছু মিশন পরিচালনা করে। দৈনন্দিন কার্যক্রমের পাশাপাশি স্কোয়াড্রনগুলো জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শান্তিকালীন এবং দেশের জরুরী পরিস্থিতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছে।

ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদানের এ অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনী একাডেমির কুচকাওয়াজ চত্বরে অনুষ্ঠিত সুসজ্জিত কুচকাওয়াজ ভিটিসির মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করেন। কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন বিশ^াস, পিএসসি, জিডি(পি)। কুচকাওয়াজের সময় প্যারেড কর্তৃক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করা হয় এবং এরপরই দেশের স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় বদ্ধপরিকর চৌকস বিমানসেনারা তিনবার তুর্যধ্বনি প্রদান করেন। পরে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড সমুন্নত রাখার জন্য মোনাজাত করা হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনীর সকল স্তরের সদস্যদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত ভাষণে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যার নির্দেশে পরিচালিত দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধার সাথে আরও স্মরণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানসহ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎস্বর্গকারী সকল শহীদদের। তিনি আরও বলেন, জাতীয় পতাকা ধারণ যে কোন স্কোয়াড্রন বা ইউনিট কর্তৃক বাহিনী তথা রাষ্ট্রের প্রতি অবদানের এবং যে কোন অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে সম্পন্ন করার স্বীকৃতির পরিচায়ক। এরূপ স্বীকৃতি ১১ স্কোয়াড্রন ও ২১ স্কোয়াড্রন এর কার্যক্রমের উৎকর্ষতাকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে অনন্য প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে যা বিমান বাহিনী তথা রাষ্ট্রের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি অন্যতম প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

অনুষ্ঠানে সামরিক, আধা-সামরিক বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং অসামরিক আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত পোস্ট