Home » ৪৬তম আইপিএএমএস ২০২২ সমাপ্ত: আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে ২৪টি দেশের সেনারা

৪৬তম আইপিএএমএস ২০২২ সমাপ্ত: আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে ২৪টি দেশের সেনারা

Author: আইএসপিআর

ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২: আঞ্চলিক তথা বৈশ্বিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতা  বজায় রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২) ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং ইউএস আর্মি প্যাসিফিক কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত ৪৬তম ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মিস ম্যানেজমেন্ট সেমিনার (আইপিএএমএস) ২০২২ এর সমাপনী অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি এবং যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান জেনারেল চার্লস এ. ফ্লিন সহ অংশগ্রহণকারী ২৪টি দেশের সামরিক নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ  সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে জেনারেল শফিউদ্দিন এবং জেনারেল ফ্লিন বিদায়ী বক্তব্য রাখেন এবং আইপিএএমএস-২০২২ এ অংশগ্রহণকারী সকল দেশের প্রতিনিধিদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন। এছাড়াও পরবর্তী আয়োজক হিসেবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিনিধির কাছে আইপিএএমএস এর পতাকা হস্তান্তর করা হয়। সবশেষে বাদ্যযন্ত্রে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত বাজিয়ে সমাপনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

 

বিদায়ী বক্তব্যে জেনারেল ফ্লিন বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঐক্য ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার দৃঢ় বার্তা পাঠাতে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ২৪টি দেশের স্থল বাহিনীর নেতৃবৃন্দ এই সম্মেলনে একত্রিত হয়েছে। সেই সাথে এই সম্মেলন আয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি আন্তর্জাতিক মানদন্ড স্থাপন করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। অন্যদিকে এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের বন্ধুর সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

 

উল্লেখ্য, গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪৬তম আইপিএএমএস -২০২২ এর উদ্বোধন করেন। গত ১২-১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত চারদিনব্যাপী এই সম্মেলনে “ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জসমূহ” নিয়ে আলোচনা ও মতবিনিময় করেন সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ২৪টি দেশের সিনিয়র সামরিক নেতৃবৃন্দ। এবারের সম্মেলনে ‘বলিষ্ঠ শান্তিরক্ষা’, ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ এবং ‘ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে স্থল বাহিনীর ভূমিকা’ বিষয়ে ৩টি প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।

 

সম্মেলনের একটি পর্ব কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয় যেখানে “ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগিতা বাড়াতে সামরিক কূটনীতি” বিষয়ে একটি গোল টেবিল বৈঠকে মিলিত হন অংশগ্রহণকারী সামরিক নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও জুনিয়র নেতৃবৃন্দ পেশাদারিত্বের উপর পৃথক পৃথক আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন। সম্মেলন শেষে প্রতিনিধি দলটি উখিয়ায় বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমার নাগরিকদের (এফডিএমএন) কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শনের মাধ্যমে  ক্যাম্পের বাস্তব চিত্র স্বচক্ষে অবলোকন করেন।

 

সম্মেলনের তৃতীয় দিনে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ড. দীপু মনি, এমপি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীর ক্ষমতায়নে সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। এরপর, সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিবৃন্দ ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে ‘বলিষ্ঠ শান্তিরক্ষা’, ‘নারীর ক্ষমতায়ন’, এবং ‘আঞ্চলিক সমস্যা সমাধানে স্থল বাহিনীর ভূমিকা’ শীর্ষক বিষয়ে ব্রেক আউট সেশনে অংশগ্রহণ করেন।

 

এসব কর্মকাণ্ড ছাড়াও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রদর্শনী আয়োজনের মাধ্যমে আগত অতিথিদের কাছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়।

 

এই সম্মেলনের মাধ্যমে  ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বেগবান হবে এবং এই অঞ্চল তথা বিশ্বে বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রকাশ ও সুনাম আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।

 

সম্পর্কিত পোস্ট